মানবজীবন মাত্র-ই কঠিন সময়ের উপস্থিতি। বিশেষ করে যখন বিশ্বের আনাচে-কানাচের মুসলমানরা কঠিন সময় পার করছে। আশা করি, কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহর এই সান্ত্বনা-বাণী ভয়াবহ অবস্থার শিকার মুসলিমদের অন্তরে প্রশান্তি এনে দেবে—
সূতরাং দুঃখের সাথেই রয়েছে সুখ। নিশ্চয় দুঃখের সাথেই রয়েছে সুখ। [সুরা ইনশিরাহ, আয়াত : ৫-৬]
তারপরও কারো মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে—
- জীবনের বাঁকে বাঁকে কেন আমাদের এত দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে?
- আল্লাহ কেন আমাদের পুরো জীবনটাকে সহজ করে দিলেন না?
- যে মানুষটি সত্যের ওপর অবস্থান করছে, তাকে কেন নির্যাতিত হতে হবে?
- একজন মুসলমানকে কেন মিথ্যাবাদী ও পাপাচারীরা এসে খুন করবে?
- আল্লাহ মুমিন বান্দাদের কেন তার বান্দাদের ভোগান্তি থেকে রক্ষা করছেন না?
- তিনি কেন তাদের বিজয়ী করে দেন না?
একটা সময়ে এসে মক্কার সকলে নবিজির কথা বিশ্বাস করে নিয়েছিল এবং মুসলমানও হয়ে গিয়েছিল। তাহলে শুরুতে কেন তারা এর বিরোধিতা করেছিল, নবিজি ও তার সাহাবিদের নির্যাতন করেছিলেন এবং দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে কেন তারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল?
কেন তারা প্রথমেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিলেন না? তাহলে তো এত বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো না। এগুলো না হলেই কি ভালো হতো না?
কেন আমাদের চোখের সামনে ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়া, আরাকান ও কাশ্মীরসহ অন্যান্য মুসলিম দেশের বাসিন্দাদের অত্যাচারিত হতে হবে?
কেন তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির বলি হতে হবে?
কেন মুসলমানদের ইসলামবিদ্বেষীদের নির্যাতনের শিকার হতে হবে?
কেন মুসলমানরা নিজেদের অধিকারটুকুও দিনেদিনে হারিয়ে ফেলছে?
কেন তারা নিজেদের পূর্বসূরিদের মতো ঈমানি শক্তিতে বলিয়ান হয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না? লাঞ্ছনার গ্লানি ঝেড়ে সাহসিকতার সাথে অগ্রসর হচ্ছে না?
কুরআনের আয়াত আর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস পড়লে, যে কেউ খুব সহজে মনের ভেতর জাগ্রত এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবে। উপলব্ধি করতে পারবে, পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে চলে আসা এমন বিষয়গুলোর পেছনের রহস্য।
আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের একজনকে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। [সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ৪]
কুরআনের এই আয়াতটির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের অন্তরকে শান্ত এবং হৃদয়কে প্রশান্ত করতে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন যে, মুমিন বান্দাদের কেন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়... কেন তাদের দুঃখ-কষ্টে জর্জরিত হতে হয়... আর কেনই বা পার্থিব জীবনের বাঁকে বাঁকে তাদের বিষাদগ্রস্ত হতে হয়... আর এটাও সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন—তিনি মুমিনদের সাহায্য ছাড়াই শত্রুদের দমাতে পারেন। নিশ্চয়ই তিনি যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, তিনি কারও প্রতি নির্ভরশীল নন। তিনি তো সেই সত্তা, যিনি ‘কুন’ (হও) বললেই সবকিছু হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর বিধান হচ্ছে, তিনি বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বান্দাদের পরীক্ষা করা। তাই আমাদের যে বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে, এই জীবন নিরন্তর পরীক্ষা ছাড়া আর কিছুই নয়।
যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন—তোমাদের মধ্যে কে কর্মে উত্তম। [সুরা মুলক, আয়াত : ২]
এই পরীক্ষার-ই একটি অংশ হলো, আল্লাহ দেখতে চান কারা সত্যের সমর্থন করে এবং সত্যের জন্য লড়াই করে। কঠিন সময়ে যদি এই পরীক্ষাটি না নেওয়া হতো, তাহলে সকলেই দাবি করে বসত যে, তারা সত্যের জন্যই লড়াই করেছিল। এই দাবির সত্যতা যাচাই করার জন্যই আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে কঠিন পরীক্ষা ও দুঃখ-দুর্দশার সম্মুখীন করেন। আল্লাহ বলেন—
লোকেরা কি মনে করেছে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ বললেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে; আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না? [সুরা আনকাবুত, আয়াত : ২]
আল্লাহ আমাদেরকে এই পরীক্ষায় ফেলার কারণ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন—
আর আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি। ফলে আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন, কারা সত্যবাদী আর কারা মিথ্যাবাদী। [সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৩]
পারতপক্ষে বিপদ-আপদগুলো হচ্ছে পার্থক্য নিরুপণকারী। এগুলোর মাধ্যমেই বোঝা যায়, কারা সত্যবাদী আর কারা সত্যবাদী নয়। কার তার প্রতিপালকের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে আর কারা বিপদ এলে আল্লাহর উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।
কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে... [সুরা বাকারা, আয়াত : ২১৪]
এই কথাটি বলেছিল আল্লাহর রাসুল ও তাঁর সাহাবিরা। যখন তাদের স্পর্শ করেছিল দুঃখ-দুর্দশা; আর আল্লাহর পথে পদে পদে কম্পিত হয়েছিল তারা। আল্লাহ তো তার রাসুলকে এবং সমগ্র মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেনই, তার পথ বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্টে পরিপূর্ণ।
নাকি তোমরা ভেবেছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মতো কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে স্পর্শ করেছিল কষ্ট ও দুর্দশা এবং তারা কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসুল ও তার সাথি মুমিনগণ বলেছিল, ‘কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য?’ জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। [সুরা বাকারা : ২১৪]
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববতীদের সামগ্রিক অবস্থার কথা বলে ঈমানদারদের বুঝিয়েছে যে, তার পথে থাকতে হলে বিপদ-আপদের মুখোমুখি হওয়াটা অবধারিত। দুঃখ-দুর্দশায় জর্জরিত হওয়াটাও অনিবার্য। আর আয়াতের পরের অংশেই ঈমানদারদের হৃদয়ের প্রশান্তির জন্য সুসংবাদও দিয়েছেন। তাই আমাদের হতাশ হলে চলবে না। মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে এবং আল্লাহর উপর আস্থা রাখার পাশাপাশি এই তিনটি বিষয়ের প্রতিও বিশ্বাস রাখতে হবে—
১.বিজয় কেবল আল্লাহরই,
২.এবং তা অতি সন্নিকটে।
৩. আর তার জন্য প্রয়োজন আল্লাহর সাহায্য।
বিপদ-আপদ থেকে উত্তীর্ণ হতে পারলে ঈমানদারদের অন্তর তাদের প্রতিপালকের মনোনিত দ্বীনের জন্য আরও একনিষ্ঠ হয়ে যায়। এতে তারা আল্লাহর প্রিয়াপাত্রে পরিণত হয়। তাছাড়া তখন তারা পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর ওপর ভরসাও করে। আর আল্লাহও তাদের আপন বান্দাদের মধ্যে শামিল করে নেন। সর্বপোরি বিপদ-আপদ থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় উত্তরণের সবচেয়ে উপকারী দিকগুলোর একটি হচ্ছে—এতে ঈমানদারদের হৃদয়ে ‘তাওহিদের বাণী’ দৃঢ়ভাবে গেঁথে যায়, যা কি না সুখের সময়ে সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর যাতে আল্লাহ পরিশুদ্ধ করেন ঈমানদারদেরকে...
উহুদের যুদ্ধ থেকে যখন মুসলিম বাহিনীর একাংশ পরাজিত হয়ে ফিরল, তখন মুমিনদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যে আয়াত নাজিল হলো। যেন তারা নিজেদেরকে শুধরে নিতে পারে, এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং তাদের ভুল কী ছিল, তা বুঝতে পারে। মুসলমানদের জন্য সময়টা অত্যন্ত ভয়াবহ ছিল। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নিজেই একে ‘মুসিবাহ’ (দুর্যোগ) শব্দটি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছিলেন। আল্লাহ কেন তার প্রিয় রাসুল ও তার সাহাবিদের এমন পরিস্থিতিতে ফেলেছিলেন... সেটারই কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন—
আর যাতে আল্লাহ পরিশুদ্ধ করেন ঈমানদারদেরকে... [সুরা আলে ইমরান : ১৪১]
ঈমানদারদের জন্যে এমন একটা পরিস্থিতির প্রয়োজন ছিল। এই পরিস্থিতি মূলত তাদের পরিশুদ্ধ হতে সহায়ক হয়েছে। এটা প্রত্যেকের ভেতরে যে অশুদ্ধতার জঞ্জাল ছিল, তা বিদূরিত করে পরিশুদ্ধতা এনে দিয়েছে । এটা তাদেরকে দুনিয়ামুখী ভালোবাসা থেকে পরিশুদ্ধ করেছে। এটা তাদের সত্যবিমুখতা থেকে পরিশুদ্ধ করেছে। পূর্বে কৃত গুনাহ থেকে দিয়েছে শুচিতা।
আল্লাহ এই সমস্ত পরীক্ষাকে বলেন, ‘ফিতনাহ’। এই শব্দটির শাব্দিক অর্থ করলে দাঁড়ায়—আগুনের ব্যবহার। ‘ফিতনাহ্’ আগুনের মতো ভয়াবহ। আগুন কখনও স্বর্ণকে নষ্ট করতে পারে না বরং তা স্বর্ণকে খাঁটি করে আরও সুন্দর করে তুলে। ঠিক একইভাবে ফিতনাও ঈমানদারদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। বরং তাদের আরও পবিত্র করে দেয়।
‘পরিশুদ্ধতার’ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ঈমনাদাররা যখন আল্লাহকে বিপদ-আপদের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগল, আল্লাহ তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটির দিকে আলোকপাত করলেন—
তা তোমাদের নিজেদের কারণেই আবর্তিত হয়েছে। [সুরা আলে ইমরান : ১৪১]
এই আয়াতটি ঈমানদারদের নিজেদের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে সাহায্য করবে। নিজেদের ঈমান ও আমল উন্নত করার জন্য আত্মনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে। সর্বোপরি নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে সাহায্য করবে।
আর যাতে তিনি জেনে নেন মুনাফিকদের... [সুরা আলে ইমরান : ১৬৫]
আত্মশুদ্ধিতার পাশাপাশি সামগ্রিক পর্যায়ের পরিশুদ্ধতাও এর আরেকটি ধরন। উহুদের যুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে আল্লাহ বলেন—
আর দুইদল মুখোমুখি হওয়ার দিন তোমাদের ওপর যে বিপদ এসেছিল তা আল্লাহর অনুমতিক্রমেই এসেছিল। যাতে তিনি মুমিনদের চিনে নিতে পারেন। আর তিনি মুনাফিকদের চিনে নিতে পারেন... [সুরা আলে ইমরান : ১৬৭]
প্রত্যেক জাতি-গোষ্ঠীর মাঝেই মুনাফিক রয়েছে। তারা নিজেদের সত্যের সাথে আছে বলে দাবি করে এবং মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। বদরের যুদ্ধে আল্লাহ যখন তার রাসুলকে এক বিরাট জয় দান করলেন, ঠিক তারপরই একদল মুনাফিকের উত্থান হলো। যেকোনো গোষ্ঠীতে এমন মানুষদের উপস্থিতি গোটা সমাজকেই কলুষিত করতে পারে। মুনাফিকরা কেবল পার্থিব জীবনে লাভের আশা করে। সত্যের সমর্থন করার কোনো আগ্রহই তাদের নেই। প্রতিবার তারা সত্যের বিপক্ষেই অবস্থান নেয় আর সত্যপন্থীদের মধ্যে থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।
বদরের যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে আরবে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল এবং তা আংশিকভাবে যে সফলতা অর্জন করেছিল, তা তো আমাদের সবারই মনে আছে। যারা এই বিপ্লবের জোর প্রতিবাদ করেছিল, তারা পর্যন্ত সেদিন এর জয়গান গেয়েছিল। তারপর একসময় এই বিপ্লবটি আবারও বাধার মুখে পড়ল আর সকলেই বুঝে গেল যে, দুনিয়াবি কোনো অর্জনই আর এই বিপ্লব থেকে আসবে না। তখন অনেকেই বিপ্লব থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়া শুরু করল। নিফাক আর কপটতা যে কেবল বিশ্বাস স্থাপনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তা নয় বরং এটাই তাদের চরিত্র। কঠিন সময় মুনাফিকদের মুখোশ খুলে দেয় আর সমাজকে তাদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করে।
জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যেই সৃষ্টি করেছি যেন তারা আমার ইবাদাত করে। [সুরা আলে ইমরান : ১৬৬-১৬৭]
আল্লাহর ইবাদত করাই আমাদের সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য। যদিও ইবাদত করার অর্থ কেবল নির্ধারিত কিছু আচার-আচরণ আর বিধি-নিষেধ পালন করা নয়। ব্যাপক অর্থে ইসলামে ইবাদত হচ্ছে, মানুষের আবেগ-অনুভূতি এবং শরীর—এক কথায় সবধরনের কাজকে আবিষ্ট করে রাখা। নিজের সবকিছুকে এক মহান সত্তার আদেশ-নিষেধ ও চাওয়ার কাছে সমর্পিত করা। ইবাদতের এমন অনেক অসাধারণ দিক আছে, যা বিপদের সময় ছাড়া খুব কমই আমরা স্মরণ করে থাকি।
‘সবর’ হচ্ছে—এমন একটি বিষয়, যা ব্যাপক অর্থে ধৈর্য, অধ্যবসায় ও দৃঢ়তাকে একসাথে ধারণ করে। কঠিন সময়েই কেবল এই সবরের গূঢ় অর্থ আমাদের সামনে ভালোভাবে উদ্ভাসিত হয়। আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণভাবে ভরসা করার অর্থ হচ্ছে, ‘তাওয়াক্কুল’, এটিও কেবল বিপদের সময়গুলোতেই সবচেয়ে বেশি ধারণ করা হয়ে থাকে। আমরা যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাই, তখনই আমরা সবচেয়ে বেশি নম্র হওয়ার শিক্ষা পাই। ইউনুস (আঃ) কে তিমির পেটের গহীন অন্ধকারে যাওয়ার পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিল কেন জানেন? যাতে তিনি আল্লাহর সামনে নিজেকে আরও বিনয়াবনত করতে পারেন।
আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয়ই আমি ছিলাম যালিমদের অন্তর্ভূক্ত। [সুরা জারিয়াত : ৫৬]
তোমাদের মধ্য থেকে শহিদদের গ্রহণ করেন... [সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৮৭]
মোটকথা, সত্যকে সমর্থন করার জন্যে বান্দাকে অনেকসময় কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আর এই পরীক্ষার সময়ে বান্দা যে ত্যাগ স্বীকার করে তা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। একারণেই আল্লাহ বান্দাদের বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেলেন, যেন তিনি ঈমানদারদের ঈমানি শক্তির মাত্রা যাচাই করতে পারেন এবং দেখতে পারেন যে, তারা সত্যের জন্য কী পরিমাণ লড়াই করতে পারে। তারপর তাদের মধ্যে থেকে তিনি কিছু মানুষকে বেছে নেন এবং তাদেরকে তাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটি উৎসর্গ করার সুযোগ করে দেন। আর তা হলো তাদের ‘জীবন’। এরপর তাদের জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করেন। আর এমন সব নেয়ামত দান করেন, যা তিনি অন্য কাউকে দেন না। আল্লাহ যেন শহীদদের ওপর রহম করেন এবং সত্যের বিজয় এনে দেন।
সুতরাং, কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ। নিশ্চয় কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ। [সুরা ইনশিরাহ, আয়াত : ৫-৬ ]
যারা বিপদ-আপদের পেছনের প্রভূত কল্যাণ দেখতে ব্যর্থ হয়, তারা কখনোই শান্তির দেখা পায় না। আল্লাহ যেন আমাদের ন্যায়ের পথ প্রদর্শন করেন এবং তা অনুসরণ করতে সাহায্য করেন। আল্লাহ যেন আমাদের বিপদ-আপদে সবর করার তাওফিক দান করেন। তিনি যেন আমাদের ইহকাল ও পরকালের জীবন সুখ-শান্তি দান করেন।
রায়হান আবির
১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ - ০২:৩১ পূর্বাহ্নমাশাআল্লাহ, বড় হলেও লেখাটা চমৎকার। অনুবাদিকার জন্য শুভ কামনা
ফাহাদ আব্দুল্লাহ
১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ - ০২:২১ পূর্বাহ্নবাহ... অনুবাদিকার ধৈর্য আছে, বলতে হয়.... এত বড় লেখা কেমনে অনুবাদ করল?!😯
সুন্দর
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ - ০৪:৩৬ পূর্বাহ্নমাশাআল্লাহ। ফিলিং মোটিভেটেড।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ - ০৪:৪৬ পূর্বাহ্নমাশাআল্লাহ। ফিলিং মোটিভেটেড।