১০০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি কোনো একটা সময়।
আব্বাসিদের কালো পতাকার বিজয় তখন নিভুনিভু। বিশাল সাম্রাজের আব্বাসি খেলাফত তখন প্রায় মিয়ে বসেছে, খন্ড বিখন্ড হয়ে গেছে আব্বাসিদের শৌর্য-বীর্যের খেলাফত। খলিফা চেষ্টা করছেন তার খেলাফতের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দমাতে। কিন্তু চেষ্টা চেষ্টাই থেকে যায়, কোনো সুফল বয়ে আনে না। এই ব্যর্থতার কারণেই মূলত চারপাশে কয়েকটা ছোটো ছোটো সাম্রাজ্য জেগে ওঠে। মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে শিয়ারা। সভ্যতার প্রথম থেকে জাগ্রত ইরানের সাসনীদের রাজপ্রাসাদের উত্তরসূরী হিসেবে অভিহিত বুয়িদ (Buyid) সাম্রাজ্য দখল করে নেয় বাগদাদ। বুয়িদ শিয়াদের উত্থান হয়েছিল আলি বিন বুয়া-র নেতৃত্বে ৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে ফার (Fars) দখলের মাধ্যমে। তারপর জিবাল দখলের পর তারা দখল করে নেয় ইরানের ঐতিহাসিক শহর রায় (RAY, বর্তমান shahr-e-ray)। তারপর আহমদ বিন বুয়ার নেতৃত্বে ইরাক দখল হওয়ার পর বাগদাদ চলে যায় সুন্নি মুসলিমদের খেলাফত থেকে শিয়াদের হাতে। সাসানিদের ঐতিহাসিকভাবে পাওয়া শাহেনশাহ (kings of kings) নামটি নিয়ে তারা তখন বাগদাদ চষে বেড়ায়। ঠিক তখনি সদ্য মুসলিম হওয়া একটি গোত্র সামানি সাম্রাজ্যের (৮১৯-৯৯৯) অন্তর্ভুক্ত জেন্দের কাছাকাছি একটি শহরে আশ্রয় নেয়। এই গোত্রের প্রধান হচ্ছেন—সেলজুক। সেলজুকের গোত্রের লোকেরা ছিল সামানিদের (Samanid) স্বজাতীয়। এরাই সেই সেলজুক যাদের সাথে জড়িত মুসলমানদের প্রথম দুই ক্রুসেডের ইতিহাস (১ম ক্রুসেড [1095–1099] ) আর এরাই বুয়িদ শিয়াদের কবল থেকে খেলাফত পুনরুদ্ধার করে আবার আব্বাসি খলিফা কাইম বি-আমরিল্লাহ-র কাছে ফেরত দেয়। এই সেই সেলজুক, যাদের দুর্দান্ত প্রতাপে কাপত সুদূর বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য আর বিশাল রোমান সাম্রাজ্য। মোঙ্গলদের হাতে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে যারা ছিল বাইজেন্টাইন আর রোমানদের বুকের ওপর রাখা শক্ত পাথর।
সেলজুক কে?
সেলজুক ছিলেন বর্তমান রাশিয়ার একটি বিরাট অংশ শাসনকারী একটি সাম্রাজ্য কাজারখানাতের সেনাবাহিনীতে কাজ করা একজন সৈন্য। কাজারখানাতের রাজধানী ছিল আতিলে। কাজাররা ছিল Judaism মতাবলম্বী। ফলে ঐ সাম্রাজ্যের মানুষের নামগুলোও হিব্রু থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। সেলজুক নামটিও হিব্রু বলেই মনে করা হয়। সেলজুকের পূর্বপুরুষরা ছিলেন উদারমনা। আরেক বর্ণনাতে পাওয়া যায়, তারা ছিলেন প্যাগান। তার গোত্র ছিল আতিলের বিখ্যাত সম্মানিত যোদ্ধা অঘুজ কায়নিক (Kynyk) গোত্রের । সেলজুকের পিতার নাম ছিল দুকাক যাকে তার বীরত্বের জন্য The iron Bow নামেও অভিহিত করা হয়। পিতার মৃত্যুর পর কোনোভাবে সেলজুক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তার চার সন্তানসহ খাওয়ারিজম অঞ্চলে চলে আসেন। তার সন্তানদের নিয়ে খুব বেশি বর্ণনা পাওয়া যায় না, তবে তারা প্রত্যেকেই সাহসী যোদ্ধা ছিল, ইতিহাসগ্রন্থগুলো থেকে এমনটা জানা যায়।
খাওয়ারিজম অঞ্চলটির অবস্থান ছিল ইরান, আফগানিস্থানের বিশাল অংশজুড়ে । গোত্রপ্রধান সেলজুক তার গোত্র নিয়ে আশ্রয় নেন জেন্দের কাছাকাছি একটি শহরে, যা তখন সামানি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কে জানত আর কিছুদিনের মধ্যেই পতন হবে সামানিদের আর গঠিত হবে প্রথম দুই ক্রুসেডে মুসলিমদের জন্য বীর-বিক্রমে লড়া ইতিহাস বিখ্যাত সেলজুক রাজবংশের। সেলজুক ও তার গোত্র মুসলমান হওয়ার পরপরই মূলত জেন্দে হিজরত করেন। জেন্দের সেদিকটা তখনো অমুসলিমদের দখলে ছিল। সেলজুক তার গোত্র নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। ফলে সেখানকার অমুসলিমদের সাথে তার যুদ্ধ বাধে। যুদ্ধে বেশ সাহসিকতার সাথে সেলজুক জয়ী হন। এতে তার নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সেলজুক ১০২ বছরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জিহাদরত ছিলেন। সেলজুকের নাম-ডাক চারদিকে ছড়াতে সময় লাগেনি। সামানিদের আমিরের কানেও পৌঁছে যায় তার বীরত্বের কথা। সামানিদের মুসলিম আমির তার সেনাদলে কাজ করার জন্য সেলজুকদের ডাকেন। সেলজুক সরাসরি তার বাহিনীতে যোগ না দিলেও বিভিন্ন যুদ্ধে সামানিদের সহযোগী হিসেবে লড়েন। কারাখানাত সাম্রাজ্যের সাথে যুদ্ধ তার মধ্যে অন্যতম।
সামানিদের পরিচয়
সামানি সাম্রাজ্যের নামকরণ করা হয়েছে দুইভাই সামান-হুদাতের নামানুসারে। তারা খলিফা হারুনুর রশিদের সময় তার দলের সাহসী যোদ্ধা হিসেবে ধর্তব্য হতেন। সামানের চার সন্তান- নূহ, আহমেদ, ইয়াহইয়া, ইলিয়াস—পরবর্তীতে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত তারাও আব্বাসি খলিফাদের সৈন্যদলে যোদ্ধা হিসেবেই ছিলেন। পরবর্তীতে চার ভাইয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সামানিরা একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। সামানিদের রাজধানী প্রথমে ছিল সমরকন্দ (৮১৯-৮৯২), তারপর তা সরিয়ে বুখারায় নেওয়া হয় (৮৯২-৯৯৯) এবং পতনের আগ পর্যন্ত তাদের রাজধানী বুখারাতেই ছিল। সালতানাতের সর্বোচ্চ অবস্থানে তাদের দখলে ইরান, আফগানিস্তান,তাজিকিস্তান, তুরকেমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, পাকিস্তানসহ সুবিশাল একটা অঞ্চল ছিল। ঠিক তাদের সীমান্ত ঘেঁষেই রাজ্য শাসন করত তখনকার আরেক শক্তিশালী সালতানাত, যারা ইতিহাসে কারাখানাত বা আফ্রিসিয়ার বা ইলেকখানাত (Ilek Khanids) নামে পরিচিত। তাদের রাজধানী ছিল ইতিহাসের শত বীর-বাহাদুরদের জন্মদাতা সমরকন্দে। পরস্পর পাশাপাশি অঞ্চল হওয়ায় সামানিদের সাথে লেগেই থাকত কারাখানিদের। ট্রান্সোজিনিয়া দখলের জন্য কারাখানিদের বিরুদ্ধে সেলজুক গোত্রকে কাজে লাগায় সামানিরা।
সামানিদের পতন এবং গজনভিদের উত্থান
সামানি আমির আবু আল মালিক-এর শাসনামলে খোরাসানে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেন তার বিশ্বস্ত সেনাপতি আলপ তেজিন-কে। আল্প তেজিন আমিরের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে খোরাসান দখল করে নেয় এবং সৈন্য জোগাড় করে বুখারা অভিমুখে যাত্রা করে। বুখারা জয় করে তিনি বলখের দিকে যান। এবার সামানি আমির তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে আলপ তেজিনকে রোধ করতে তার উপর আক্রমন করেন এবং বলখ আবার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। আল্প তেজিন গজনি শহরে পালিয়ে যায় এবং শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সক্ষম হন। কিন্তু নিজের আশু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং দুর্বল সৈন্যদলের কথা মাথায় রেখে আলপ তেজিন আল মালিকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল মালিক তাকে ক্ষমা করে দিয়ে গজনির শাসনভার দেন। আল্প তেজিনের পর গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান তারই ছেলে আবু ইসহাক ইব্রাহিম। ৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন বিলগে তেজিন—যে তার প্রাথমিক জীবনে আলপ তেজিনের ক্রীতদাস ছিল। বিলগে তেজিন ক্ষমতায় বসেই সামানিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং যুদ্ধ বাধায়। যুদ্ধে বিলগে তেজিন জয়লাভ করে। আর তারপর প্রায় ১০ বছর গজনির আশেপাশের বিস্তৃত এক অঞ্চল শাসন করে কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই। তার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন পিরি তেজিন—সেও তার প্রাথমিক জীবনে আলপ তেজিনের ক্রীতদাস ছিল। কিন্তু সালতানাত পরিচালনায় অযোগ্য সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে সরিয়ে ৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ক্ষমতায় বসানো হয় সুবুক তেজিন (সুবুকতেগিন)-কে।
এদিকে ৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কারাখানাত সাম্রাজ্যের সুলতান বুগরা খান সামানিদের দুই বিদ্রোহী সেনাপতি আবু আলি সুমজুরি ও ফাইকের সহয়তায় ইসফাদজাব দখল করে নেয়। এটাই সামানিদের রাজ্যে কারাখানিদের প্রথম আক্রমণ। কিছুদিন পর ঐ দুই বিদ্রোহীর সাহায্যে মাভেরাননগর আক্রমণ করেন। সামানিদের ১৪ বছরের আমির নূহ বিন নাসর—সুবুক তেজিন ও তার পুত্র মাহমুদ এবং সেলজুকের সাহায্য প্রার্থনা করেন। বাপ-ব্যাটা এগিয়ে এসে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন। সামানি আমির খুশি হয়ে সুবুক তেজিনকে Defender of faith and state এবং তার ছেলে মাহমুদকে Sword of the state উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু শেষে রক্ষা হলো না তার। বুগরা খান মাভেরাননগর দখল করে নেন এবং সুমজুরির ভাগে যায় খোরসান। নূহ বিন নাসের পালিয়ে যান । বুগরা খান সামনে এগোতে চান, কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের কারণে তার সাম্রাজ্যে ফিরে যান আবার। নূহ তার রাজধানী পুনরুদ্ধারের জন্য ফিরে আসেন। বুগরা খান তার রাজ্যে ফিরে যাওয়ার সময় পথেই মৃত্যুমুখে পতিত হন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হন ইলেক আবু নাসর। অন্যদিকে সুবুক তেজিন মারা যান ৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। তার স্থানে তার পুত্র ইসমাইল ক্ষমতায় আসেন, কিন্তু অযোগ্যতার প্রশ্ন তুলে তাকে সিংহাসনচ্যুত করে ক্ষমতায় বসেন মাহমুদ। মাহমুদ ক্ষমতায় বসেই নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করেন। অন্যদিকে সামানিদের নতুন আমির হন আল মালিক। আল মালিক তার সেনাপতিদের সাহায্যে একটি বিরাট বাহিনী গঠন করে মাহমুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। মাহমুদ শেষমেশ শান্তিচুক্তি করতে বাধ্য হন। কিন্তু তারপরের বছরই আল মালিক চুক্তি ভঙ্গ করে মাহমুদের উপর আক্রমণ করে বসেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে তিনি মাহমুদের কাছে হেরে যান। ফলে সামানিদের শত বছরের সালতানাতের সূর্য ডুবে যায়। মাহমুদ খোরাসান নিজের দখলে নিয়ে নেন। আর কারাখানাতের আবু নাসর মাভেরননগর দখল করে নেন। মাহমুদের খোরাসান দখলের মাধ্যমে পত্তন হয় গজনভি সাম্রাজ্য (Ghaznavid)। এসব ৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের দিকের ঘটনাপ্রবাহ।
সেলজুকদের উত্থান
সেলজুক সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ধরা হয় যুগ্মভাবে তুগ্রুল বে (১০১৬-১০৬৩) এবং তার ভাই চাগরি বে (৯৮৯-১০৬০)-কে। তুগ্রুল বে ছিলেন এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা সেলজুকের নাতি। তুগ্রুল এবং চাগরি হিব্রু নাম। অনেক আরব ঐতিহাসিক তাদের নাম বলেছেন—সাওল মোহাম্মাদ ও দাউন। তাদের মতে তুগ্রুল ও চাগরি তাদের সাহসিকতার স্বীকৃতি দেওয়া উপাধী কেবল। তুগ্রুল বে ও তার ভাই চাগরি ছিলেন বেশ সাহসী যোদ্ধা। চারপাশে খাওয়ারিজম, সামানি, গজনভিদের ভয়াল অবস্থা দেখে নিজের গোত্রের উন্নতির কথা চিন্তা করলেন তুগ্রুল বে। সামানিদের তখন পতন হয়ে গিয়েছে। সামানিদের অনুকূলে থাকা বেশীরভাগ রাজ্যই তখন গজনভি বা কারাখানাত সাম্রাজ্যের দখলে। সামানিদের স্বজাতীয় হওয়ায় তাদের উপর অত্যাচারের খড়্গ নেমে এসেছে গজনভিদের দ্বারা। সেলজুকরা তাদের অধিকৃত সকল জমি এবং পশুচারণ ভূমি হারালো। উপায়ন্তর না দেখে তুগ্রুল বে তার গোত্রের সবাইকে নিয়ে কারাখানাত সাম্রাজ্যের সঙ্গে যোগ দিলেন। পরবর্তী ২০ বছর কারাখানিদের সাথে তাদের কোনো সমস্যাই দেখা যায়নি। সমস্যা বাঁধে যখন ১০২০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কারাখানাত যুবরাজ আলী তেকিন পালিয়ে বুখারায় চলে আসে। আলী তেকিন পূর্বে ১০১৭ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বুখারা শহরের গভর্নর ছিল। কিন্তু গ্রেট খান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে তার কাজ থেকে অব্যহতি দেয় এবং গ্রেফতার করে। আলী তেকিন পালিয়ে আসে সেলজুকদের কাছে। এদিকে তদানীন্তন সময়ে সেলজুকদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিল অনেকগুলো নাম না জানা গোত্র। আরব,আফগানি ও তুর্কিসহ আরো অনেক।
তুগ্রুল চিন্তা করে দেখলেন—তাদের যদি কোনোভাবে এক করা যায়, তাহলে যে কোনো পরাশক্তিকে হারিয়ে দিতে পারবেন অনায়াসেই। তুগ্রুল বে আর তার ভাই চাগরি বে দিনরাত খেটে এক করলেন ফসলের দানার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গোত্রগুলোকে। সাথে সঙ্গী হিসেবে পেলেন পালিয়ে আসা যুবরাজ আলী তেকিন এবং আরসালান-কে । সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তারা বুখারা দখল করে নেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। গজনির সুলতান তখন মাহমুদ। কারাখানাতের আমির কাদের খান বুখারা দখলে মাহমুদের সাহায্য চান। ১০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ঘটনা, যখন মাহমুদ কথা দেয়, তিনি সেলজুকদের হাত থেকে বুখারা নিয়ে কারাখানাতদের ফিরিয়ে দিবেন। মাহমুদ ছুটলেন বিদ্রোহীদের শায়েস্তা করতে। আলী তেকিন পালালেন। মাহমুদ আরসালানকে ধরে ফেলেন এবং তাকে বন্দী করে ভারতে পাঠিয়ে দেন। ৭ বছর পর ১০৩২ এর দিকে আরসালান মারা যান এবং তুগ্রুল বে ও তার ভাই চাগরি বে সমগ্র অঞ্চলের আধিপত্য পেয়ে যান। ফলে সব ক্ষমতা তদের হাতে চলে যায়। অন্যদিকে ১০৩০ এর দিকে মাহমুদ মারা যান। তার স্থলাভিষিক্ত হন তার পুত্র মাসুদ-১ম। মাহমুদের মৃত্যুর রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ১০৩৪ এর দিকে গজনভিদের ভেতর আরেকটা বিদ্রোহ হয়। এই বিদ্রোহের জন্মদাতা ছিল—খাওয়ারিজমশাহ হারুন। ১০৩৫ এর দিকে মাসুদ হারুনকে হত্যা করলে বেশ জটিলতায় পড়ে সেলজুকরা। কারণ মাসুদের পরের লক্ষ্য যে তুগ্রুল বে; সেটা সেলজুকদের অজানা ছিল না। তেঁতে উঠছে মাসুদ। ফলে সেলজুকরা কিছুটা ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়েই খাওয়ারিজম অঞ্চল ছাড়ে। কিন্তু তারা তাদের পূর্বের আবাস বুখারা বা জেন্দেও যেতে পারছিল না। কারণ ওখানে তখন তাদের জাতশত্রু মালিক শাহর শাসনকাল চলছিল। তাই তারা ১০৩৫ এর দিকে পুনরায় মাসুদের রাজ্যের অন্তর্গত খোরাসানে প্রবেশ করে, সাথে মাত্র ১০০০০ সৈন্য ১০৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মে সুলতান মাসুদের কাছে তুগ্রুল বের সাক্ষরিত একটি চিঠি যায়। তুগ্রুল বেশ ভালো একটি প্রস্তাব দেয়। মাসুদ নেসা ও ফ্যারাকে শহর দুটি সেলজুকদের ব্যবহার করতে দিবে, বিনিময়ে তুগ্রুল বে খোরাসানের উত্তর সীমান্ত প্রতিরক্ষার দায়িত্ব নিবে। মাসুদ প্রস্তাব না মানার হলে, না মেনেই ক্ষান্ত থাকতে পারতো। কিন্তু সে বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলে। অনেক হাতিসহ ১৭০০০ সৈন্য বিশাল এক বহর পাঠায় সেলজুকদের উচ্ছেদ করতে। ১০৩৫ খ্রিষ্টাব্দের জুনে সংঘটিত মুখোমুখি যুদ্ধে সেলজুকরা জিতে যায় তাদের বিচক্ষণতা ও রণকৌশলের কারণে। ফলে মাসুদের সেলজুকদের সাথে চুক্তি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। তখন মাসুদ চুক্তির জন্য ৩ টি শর্ত নির্ধারণ করে :
- নেসা, ফ্যারাভ, দিহিস্থান প্রভৃতি অঞ্চল সেলজুকদের বসবাসের জন্য ছেড়ে দিবে।
- সেলজুকরা মাসুদকে সুলতান হিসেবে মেনে নিবে।
- সেলজুকরা সবসময় মাসুদের দরবারে সবসময় হাজিরা দিবে।
কিন্তু চুক্তির প্রথম শর্ত ছাড়া বাকি কোনো শর্তই মেনে নেয়নি সেলজুকরা। বরং তারা ১০৩৬ খ্রিষ্টাব্দে মার্ভ, সেরাখের দখল নিতে অগ্রসর হয়। মাসুদ ক্রমশ রাগে ফেটে পড়ার উপক্রম হয়। ১০৩৮ খ্রিষ্টাব্দে সে সেলজুকদের বিরুদ্ধে বিশাল এক সৈন্যবহর পাঠায়। দুই বাহিনীর সৈন্যরা সেরাখে মুখোমুখি হয় এবং সেলজুক তুর্কিরা এবারও জিতে যায় এবং খোরাসান নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। এবার মাসুদ নিজে এগিয়ে আসে তাদের বাঁধা দিতে এবং ১০৩৯ উলুয়াআবাদের যুদ্ধে সেলজুকদের হারিয়ে নিশাপুর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু তুগ্রুল বে দমে না গিয়ে ১০৪০ আবার মাসুদের মোকাবেলা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ছিল, ১০৪০ খ্রিষ্টাব্দে সেরাখের সেই যুদ্ধে সেলজুকরা আবার হারে গজনভিদের কাছে।
১০৪০ খ্রিষ্টাব্দে মার্ভ আর সারাখ শহরের মাঝখানে এক মরণাপন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তুগ্রুল বের নেতৃত্বাধীন সেলজুক বাহিনী আর মাসুদের নেতৃত্বাধীন গজনভি বাহিনী। ইতিহাসে তা Battale of Dandanaqan নামে পরিচিত। যতটুকু জানা যায়—গজনভিদের সৈন্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০,০০০ হাজার আর সেলজুক বাহিনী সৈন্য সংখ্যা মাত্র ১৬,০০০ হাজার। কিন্তু তুগ্রুল বে ছিলেন খুবই বিচক্ষণ। তিনি মাসুদের আগেই যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন এবং নিজেদের পানের জন্য পর্যাপ্ত কিছু পানির কূপ রেখে বাকি সবগুলোতে বিষ মিশিয়ে দেন। গজনভিদের বাহিনী পানির অভাবে ধুকতে থাকে এবং ময়দানে বেশিক্ষণ টিকতে না পেরে পিছু হটতে চায়। কিন্তু তুগ্রুল বে ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। মাসুদের আসল বাহিনী পর্যদুস্ত হয়ে পালিয়ে যায়। মাসুদের বিশাল ইনফ্যান্ট্রি পিপাসারত হয়ে চতুর্দিকে ছুটতে থাকে এবং অনেকেই মরুভূমিতে পালিয়ে জান বাঁচায়। গজনভিদের ভারতীয় সৈন্যরা ধূলার সাথে মিশে যায় সেলজুকদের আক্রমণে। আর আরব ও কুরদিশরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । মাসুদ ভারতে পালিয়ে যান এবং বন্দী অবস্থায় মারা যান।
Battle of Dandanaqan-র কল্যাণে তুগ্রুল বে দখল করে নিলেন খোরসান, বলখের মতো শহরগুলো। এত বড় যুদ্ধে জয়ী হয়ে তুগ্রুল বের আত্মবিশ্বাস তখন আকাশচুম্বী। তিনি গজনভি বাহিনীকে পাঞ্জাব পর্যন্ত পশ্চাদপসরণ করালেন। মধ্য এশিয়ার পশ্চিমাংশ চলে আসল সেলজুকদের হাতে। এদিকে ১০৪০ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে কারাখানি সাম্রাজ্যের সুলতান হন—আহমদ বিন খিজির। সালতানাতের আলিমদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় আহমদের। আলেমরা তুগ্রুল বে-কে আক্রমণ করার জন্য আমন্ত্রন জানালেন। তুগ্রুল বে কারাখানিদের উপর আক্রমণ করলেন এবং জিতেও গেলেন। কিন্তু বিচক্ষণ তুগ্রুল ক্ষমতা তার হাতে তুলে না নিয়ে আহমদকে আবারও ক্ষমতায় রাখে। কিন্তু হাতের পুতুল বা সামন্ত রাজা হিসেবে যে সেলজুকদের কথামতো উঠাবসা করবে। মধ্য এশিয়ায় যখন এমন ঘটনা ঘটছে, তখন আনাতোলিয়ায় আক্রমণ চালিয়েছে রোমান এম্পায়ার। আনি সিট বর্তমান তুরস্কের কারস (kars) প্রদেশের অন্তর্গত এবং আর্মেনিয়া সীমান্তের কোল ঘেষে অবস্থিত। বেশ ভালো পাহাড় আছে ওদিকটায়। আনি সিট সাম্রাজ্যের দায়িত্বে তখন ভাহরাম। আর রোমানদের পথ দেখাচ্ছেন রাজা কন্সটান্টিন-৯। বেশ জোরের সাথেই আক্রমণ করলো রোমনরা । কিন্তু ভাহরামের একাগ্রতা আর রাজ্যের প্রতি ভালোবাসার কাছে হেরে গেল রোমানরা। ভাহরাম কে সাহায্য করলো তার রাজ্যের পাহাড়গুলো। ভাহরাম তার বাহিনী নিয়ে পাহাড়ের উপর থেকে তীর চালিয়ে গেল লাগাতার। উপায় না দেখে পিছু হটলো রাজা কন্সটান্টিন। এটা ১০৪২ খ্রিষ্টাব্দের ঘটনা।
১০৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তুগ্রুল বে তার রাজধানী নিশাপুর থেকে সরিয়ে রায় নগরীতে নিয়ে যান, যা ছিল তখনকার অন্যতম সমৃদ্ধ শহর। তার ঠিক কিছু সময় পর রোমনরা আক্রমণ করল বাগ্রাটিদ সাম্রাজ্যে। সেখানকার রাজা ছিল রাজা গ্যাগিক-২। প্রচণ্ড যুদ্ধ হলো। রোমনরা হেরে গেল। এরপর রোমনরা আবার আব্বাসি আমির আবুল আসওয়ার ইবনে ফাদল-এর সাথে জোট বেঁধে পুনরায় বাগ্রাটিদ সাম্রাজ্যে আক্রমণ করল । কিন্তু শূন্য হাতে ফিরতে হলো আবারও। যুদ্ধে হেরে রোমনরা এবার কুটচালের আশ্রয় নিল। ১০৪৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তারা শান্তি চুক্তির কথা বলে রাজা গ্যাগিককে ডাকল। তারপর ছদ্মবেশধারীদের দিয়ে হত্যা কোলো ধর্মানুরাগী ও দেশপ্রেমিক রাজা গ্যাগিককে। ফলে, পশ্চিম আর্মেনিয়া চলে গেল রোমানদের পদতলে। কিন্তু পূর্বের অংশে ছাড় দিল না আব্বাসি সাদ্দাদিয় আমিররা। ফলশ্রুতিতে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয় যে, একপাশে রোমানরা, আরেকপাশে আব্বাসি সাদ্দাদিরা আর মাঝামাঝিতে সেলজুকরা। যার কারণে খুব তাড়াতাড়িই বেঁধে যায় সেলজুকদের সাথে রোমানদের। এদিকে ১০৪৫ খ্রিষ্টাব্দে জর্জিয়ার বিশ্বাসঘাতক ডিউক লিপারট-এর কথা অনুসারে রাজা বাগেরাত-৪-এর অধীনে থাকা জর্জিয়ায় আক্রমণ চালায় রোমানরা।
আশেপাশে রোমানদের এমন নীতিবিরুদ্ধ কাজ দেখে সেলজুকরা আর বসে থাকে না। সীমান্তে বসে তাদের গা জ্বলা শুরু হয়। ১০৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ সেপ্টেম্বরে Battle of Kapetrou-এ রোমান সৈন্যদের মুখোমুখি হয় সেলজুক বাহিনী। রোমান সৈন্যরা এবার আগের প্রতিদান স্বরূপ ডিউক লিপারট-এর কাছে সাহায্য চায়। লিপারট এগিয়ে আসে মুসলমানদের পরাজিত করতে। একপাশে ৫০,০০০ হাজার সৈন্যের বিশাল রোমান ও জর্জিয়ান বাহিনী, যাদের নেতৃত্বে এরন (Aaron), লিপারট (Lipart) এর মতো দক্ষ সেনাপতি, আরেকপাশে বাঘের মতো বীরবিক্রমে লড়া সেলজুক বাহিনী। সেলজুকদের নেতৃত্ব থাকে তুগ্রুল বে এর বৈপিত্রিয় ভাই ইব্রাহিম ইয়িনাল।
ইব্রাহিম খুবই ধূর্ত একজন সেনাপতি ছিলেন। তিনি চিন্তা করে দেখলেন—এত বড় বাহিনীর সাথে মুখোমুখি যুদ্ধে তিনি জিততে পারবেন না। তাই তিনি সেনাপতিদের নিয়ে একটা আলোচনা সভা ডাকলেন এবং যুদ্ধের টেকনিক পরিবর্তন করলেন। Hit and run (আঘাত কর আর পালাও) টেকনিক অনুসরণ করে তিনি রোমানদের বিশাল ডিফেন্স ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন। সেলজুকদের মূলমন্ত্র ছিল till cock's crow। রোমানরা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। রোমানদের সাথে ধ্বংস হয়ে গেল আরতযে ( Artze) শহর এবং রোমানদের ঘাঁটি আইবেরিয়া। রোমানরা পরাজিত হলো। বন্দী করা হলো লিপারটকে। পরে অবশ্য সেলজুকদের সাথে আর না যুদ্ধ করার শর্তে তাকে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হয়। এটাই ছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে সেলজুকদের প্রথম যুদ্ধ। ঐতিহাসিক Eustothious Boilas বলেন—‘এটা ছিল সরাসরি পরাজয়’। আরব ঐতিহাসিক ইবনে আল আজহির বলেন, সেলজুকরা যাওয়ার সময় শতশত বন্দী সাথে নিয়ে যায় এবং প্রায় ১০,০০০ হাজার উট বহন করে গণিমত নিয়ে যায়। এরপর সেলজুকদের জয়রথ ছুটতেই থাকে। ১০৫০ খ্রিষ্টাব্দে কাকুয়িদ আমির ফারামুরজকে ইসফাহানের যুদ্ধে পরাজিত করে ইসফাহান দখলে নেয় সেলজুকরা। চারদিকে সেলজুকদের বিজয়ের কীর্তিগাঁথা ছড়িয়ে পড়ে। তুগ্রুল বে-র কথা চলে যায় আব্বাসি খলিফা পর্যন্ত। বাগদাদ তখনো বুয়িদ সাম্রাজ্যের শিয়াদের জবরদখলে। খলিফা তুগ্রুল বে-কে বাগদাদ আক্রমণের অনুরোধ করেন। তুগ্রুল বে তার বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে বাগদাদের দিকে যাত্রা করেন। ১০৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সেলজুকদের সাথে বুয়িদদের যুদ্ধ হয়। বুয়িদের আমির তখন আমির আল-মালিক। যুদ্ধে সেলজুকরা জয়লাভ করে এবং বাগদাদ দখল করে নেয়। আমির আল-মালিক সিংহাসনচ্যুত হন এবং খলিফা কাইম বি-আমরিল্লাহ তুগ্রুল বে-কে সুলতান উপাধিতে ভূষিত করেন। সেলজুকদের রাজধানী রায় শহর থেকে ইসফাহানে স্থানান্তর করা হয়।।
তুগ্রুল বে-র মৃত্যুর পর ক্ষমতা নিয়ে গৃহযুদ্ধ বাধে। গৃহযুদ্ধে জয়ী হয়ে নতুন সুলতান হন আলপ আরসালান। মোঙ্গলদের হাতে ছিন্নভিন্ন হওয়ার আগে সেলজুকরা ছিল মধ্য এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিধর সালতানাত। ১১৯৪ পর্যন্ত সালতানাতকে ক্রমশ বাড়িয়ে নিয়েছেন দূরে... বহু দূরে... সুলতান মালিক শাহ সেলজুকির সময় তারা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন 1,500,000 sq mi। মাঝে ১০৭১ খ্রিষ্টাব্দে মানজিকার্টের যুদ্ধে লড়েছেন বাইজেন্টাইনদের সাথে (এই যুদ্ধ কে ১ম ক্রুসেডের কারণ হিসেবে ধরা হয়)।
Reference:
1. The Seljuks- V.M. Zaporozhets
2. The Great Seljuk Empire- A.C.S. Peacock
3. The Ghaznavid and Seljuk Turks- G.E. Tetley
১ম পর্ব পড়তে লিঙ্কে ক্লিক করুন https://chintadhara.com/articles/details/seljuq2
ফাহাদ আব্দুল্লাহ
১০ নভেম্বর, ২০১৯ - ২০:২২ অপরাহ্নআমার মনে হয়, সোর্সের জন্য আরো নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ দেখা উচিত। এটা লেখকের জন্য আমার পরামর্শও
মোঃ শিহাব উদ্দিন
১০ নভেম্বর, ২০১৯ - ২১:২৯ অপরাহ্নজাযাকাল্লাহু খাইরান,ভাই। অবশ্যই চেষ্টা করবো।
Bonny
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ০৭:৩১ পূর্বাহ্নGreate article. Keep posting such kind of information on your blog. Im really impressed by it. Hey there, You have done a great job. I'll definitely digg it and in my view recommend to my friends. I am sure they'll be benefited from this site. maillot foot 2020/2021
Gabriele
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ০০:২৮ পূর্বাহ্নThanks in favor of sharing such a nice opinion, article is good, thats why i have read it completely Koszulka Rumunia
Torsten
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ১২:৩২ অপরাহ্নWow that was strange. I just wrote an really long comment but after I clicked submit my comment didn't show up. Grrrr... well I'm not writing all that over again. Anyways, just wanted to say excellent blog! Koszulka Chelsea
Cody
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ২০:৪৮ অপরাহ্নJust desire to say your article is as astounding. The clearness for your submit is simply great and i could think you are knowledgeable in this subject. Well with your permission allow me to take hold of your RSS feed to stay updated with approaching post. Thanks one million and please continue the enjoyable work. Manchester City drakt 2021
Adrianne
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ০০:০০ পূর্বাহ্নFantastic post but I was wanting to know if you could write a litte more on this subject? I'd be very thankful if you could elaborate a little bit further. Thank you! Spania landslagsdrakt
Pearline
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ - ০২:২৩ পূর্বাহ্নGood day! Would you mind if I share your blog with my facebook group? There's a lot of folks that I think would really appreciate your content. Please let me know. Thanks Everton Matchtröja
Jana
০২ অক্টোবর, ২০২০ - ১৯:৫১ অপরাহ্নExcellent weblog here! Additionally your website lots up fast! What web host are you the use of? Can I get your associate hyperlink for your host? I wish my web site loaded up as fast as yours lol PSG Drakt
Teresita
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ০১:২৩ পূর্বাহ্নHowdy very cool website!! Man .. Excellent .. Amazing .. I will bookmark your blog and take the feeds also? I am glad to find numerous useful information right here within the publish, we need develop extra strategies on this regard, thank you for sharing. . . . . . sverige fotbollströjor
Stepanie
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ০৪:০৩ পূর্বাহ্নI like it when individuals come together and share opinions. Great site, continue the good work! billige Bayern Munchen Trøje
Alecia
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ০৭:১৪ পূর্বাহ্নI absolutely love your blog.. Great colors & theme. Did you create this site yourself? Please reply back as I'm trying to create my own personal blog and would like to find out where you got this from or just what the theme is called. Thanks! Camiseta Real Madrid
Eugenia
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ১৪:২৩ অপরাহ্নFor the reason that the admin of this website is working, no question very soon it will be famous, due to its quality contents. Maillot Barcelone
Penni
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ১৪:৩৯ অপরাহ্নEvery weekend i used to go to see this website, for the reason that i want enjoyment, for the reason that this this web page conations in fact pleasant funny stuff too. PSG Paita
Chassidy
০৩ অক্টোবর, ২০২০ - ১৮:৪৮ অপরাহ্নI loved as much as you will receive carried out right here. The sketch is tasteful, your authored subject matter stylish. nonetheless, you command get got an nervousness over that you wish be delivering the following. unwell unquestionably come further formerly again as exactly the same nearly a lot often inside case you shield this hike. Maglie napoli
Kandace
০৪ অক্টোবর, ২০২০ - ০৪:০০ পূর্বাহ্নHey there fantastic website! Does running a blog like this take a great deal of work? I've very little knowledge of computer programming however I had been hoping to start my own blog soon. Anyways, should you have any recommendations or techniques for new blog owners please share. I know this is off topic but I just wanted to ask. Thanks a lot! Manchester City Drakt
Oliver
০৪ অক্টোবর, ২০২০ - ১২:২৩ অপরাহ্নExcellent site you've got here.. It's hard to find quality writing like yours these days. I truly appreciate people like you! Take care!! sverige fotbollströjor
Regena
০৪ অক্টোবর, ২০২০ - ১৮:১৩ অপরাহ্নExcellent post! We are linking to this great post on our website. Keep up the great writing. Fodboldtrøjer
Jamel
০৪ অক্টোবর, ২০২০ - ১৯:৪৫ অপরাহ্নGreat weblog right here! Also your web site quite a bit up fast! What host are you the use of? Can I get your affiliate hyperlink in your host? I desire my website loaded up as fast as yours lol fussball trikot
Jonnie
০৪ অক্টোবর, ২০২০ - ২২:৪৬ অপরাহ্নExcellent blog! Do you have any tips for aspiring writers? I'm planning to start my own blog soon but I'm a little lost on everything. Would you suggest starting with a free platform like Wordpress or go for a paid option? There are so many choices out there that I'm completely confused .. Any ideas? Many thanks! camisetas de futbol
Marquis
০৫ অক্টোবর, ২০২০ - ০১:৩৭ পূর্বাহ্নIt's fantastic that you are getting thoughts from this article as well as from our discussion made at this place. Maillot Real Madrid
Winston
০৫ অক্টোবর, ২০২০ - ০১:০২ পূর্বাহ্নWoah! I'm really digging the template/theme of this blog. It's simple, yet effective. A lot of times it's tough to get that "perfect balance" between usability and visual appearance. I must say you have done a fantastic job with this. In addition, the blog loads extremely quick for me on Firefox. Exceptional Blog! Suomi Paita
Kourtney
০৫ অক্টোবর, ২০২০ - ১৪:৩২ অপরাহ্নWhy users still make use of to read news papers when in this technological globe all is accessible on net? Maglie Calcio
Javier
১৫ অক্টোবর, ২০২০ - ০৩:৫০ পূর্বাহ্নAttractive section of content. I just stumbled upon your blog and in accession capital to assert that I acquire actually enjoyed account your blog posts. Any way I will be subscribing to your feeds and even I achievement you access consistently fast. AC Milan Trøje
Rocco
১৫ অক্টোবর, ২০২০ - ০৬:৪২ পূর্বাহ্নWhat's Going down i am new to this, I stumbled upon this I have discovered It positively useful and it has aided me out loads. I'm hoping to give a contribution & assist different customers like its helped me. Great job. Juventus pelipaita
Alta
১৫ অক্টোবর, ২০২০ - ১৩:০৩ অপরাহ্নI'm really enjoying the design and layout of your blog. It's a very easy on the eyes which makes it much more enjoyable for me to come here and visit more often. Did you hire out a developer to create your theme? Great work! Maglia Leverkusen Bambino
Steve
১৫ অক্টোবর, ২০২০ - ১৬:৪৮ অপরাহ্নExcellent items from you, man. I've be aware your stuff prior to and you are just extremely great. I really like what you have received right here, really like what you're stating and the way in which during which you assert it. You make it enjoyable and you continue to care for to stay it wise. I can not wait to read far more from you. This is really a wonderful site. Bologna Uit Shirt
Harvey
১৫ অক্টোবর, ২০২০ - ২১:৫১ অপরাহ্নThis is a topic which is close to my heart... Best wishes! Exactly where are your contact details though? psg drakt
Virginia
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ০৬:২৯ পূর্বাহ্নQuality posts is the main to attract the visitors to go to see the web site, that's what this web page is providing. koszulki piłkarskie z własnym nadrukiem
Shawn
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ০৭:৩০ পূর্বাহ্নDo you have a spam issue on this site; I also am a blogger, and I was wanting to know your situation; many of us have developed some nice methods and we are looking to exchange strategies with other folks, please shoot me an e-mail if interested. Fotbollskläder
Lenore
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ০৮:৩৯ পূর্বাহ্নHaving read this I thought it was extremely informative. I appreciate you finding the time and effort to put this information together. I once again find myself personally spending way too much time both reading and leaving comments. But so what, it was still worthwhile! Fotbollströjor
Krystyna
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ১৫:৫১ অপরাহ্নKeep on working, great job! fussball trikot
Zack
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ১৫:৪৮ অপরাহ্নThese are truly fantastic ideas in concerning blogging. You have touched some fastidious points here. Any way keep up wrinting. Fodboldtrøjer
Ginger
১৬ অক্টোবর, ২০২০ - ২০:০২ অপরাহ্নHi Dear, are you actually visiting this web site daily, if so after that you will absolutely take nice experience. Magliette Calcio A Poco Prezzo
Ryan
১৭ অক্টোবর, ২০২০ - ০৫:০৮ পূর্বাহ্নYou really make it seem so easy with your presentation but I find this matter to be actually something that I think I would never understand. It seems too complicated and extremely broad for me. I am looking forward for your next post, I will try to get the hang of it! voetbalshirt
Catherine
১০ নভেম্বর, ২০২০ - ০৬:১৬ পূর্বাহ্নCurrently it looks like Movable Type is the preferred blogging platform available right now. (from what I've read) Is that what you are using on your blog? fotbollströjor
Norine
১০ নভেম্বর, ২০২০ - ১৯:৪৭ অপরাহ্নHello would you mind letting me know which web host you're working with? I've loaded your blog in 3 completely different web browsers and I must say this blog loads a lot faster then most. Can you recommend a good hosting provider at a fair price? Thanks, I appreciate it! Jalkapallo pelipaita halvalla
Guadalupe
১০ নভেম্বর, ২০২০ - ২০:৪৪ অপরাহ্নHi there, all is going fine here and ofcourse every one is sharing information, that's genuinely fine, keep up writing. maillot de foot pas cher
Carmel
১০ নভেম্বর, ২০২০ - ২৩:৫২ অপরাহ্নThanks for some other great article. The place else may just anyone get that kind of info in such an ideal approach of writing? I have a presentation subsequent week, and I'm on the search for such info. Maglie Calcio Bambino
Latesha
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ০০:০৩ পূর্বাহ্নThis blog was... how do I say it? Relevant!! Finally I have found something that helped me. Thank you! voetbalshirts outlet
Damien
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ০৪:৪৬ পূর্বাহ্নI love reading through a post that will make men and women think. Also, thank you for allowing for me to comment! fotballdrakter barn
Demi
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ০৫:০২ পূর্বাহ্নAppreciation to my father who stated to me regarding this weblog, this webpage is in fact awesome. Fotbollströja barn
Ngan
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ০৮:২২ পূর্বাহ্নHi there, constantly i used to check webpage posts here early in the morning, because i enjoy to find out more and more. Fodboldtrøjer
Jolene
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ০৮:৩৮ পূর্বাহ্নReally no matter if someone doesn't understand then its up to other users that they will help, so here it takes place. camiseta fútbol
Jonathon
১১ নভেম্বর, ২০২০ - ১১:৩৮ পূর্বাহ্নHi there! Quick question that's entirely off topic. Do you know how to make your site mobile friendly? My website looks weird when viewing from my iphone 4. I'm trying to find a template or plugin that might be able to resolve this problem. If you have any suggestions, please share. Thanks! Billige Fodboldtrøjer
Morris
১২ নভেম্বর, ২০২০ - ১৩:৩৫ অপরাহ্নWOW just what I was searching for. Came here by searching for maglie del calcio poco prezzo Maglia Calcio Bambino
Mitchel
১২ নভেম্বর, ২০২০ - ১৪:১৭ অপরাহ্নWith havin so much content and articles do you ever run into any issues of plagorism or copyright violation? My website has a lot of exclusive content I've either authored myself or outsourced but it seems a lot of it is popping it up all over the internet without my permission. Do you know any solutions to help prevent content from being ripped off? I'd genuinely appreciate it. Maillots Foot Pas Cher
Luz
১২ নভেম্বর, ২০২০ - ১৬:৪১ অপরাহ্নI am regular visitor, how are you everybody? This post posted at this web page is truly pleasant. Goedkope voetbalshirt
Hector
১২ নভেম্বর, ২০২০ - ১৬:৩৯ অপরাহ্নWhat's Happening i'm new to this, I stumbled upon this I've found It absolutely helpful and it has aided me out loads. I'm hoping to give a contribution & assist different customers like its helped me. Good job. Magliette Calcio
Richelle
১২ নভেম্বর, ২০২০ - ১৯:১৭ অপরাহ্নTerrific work! This is the kind of info that are supposed to be shared across the internet. Shame on the seek engines for now not positioning this publish upper! Come on over and visit my website . Thanks =) Kjøp Fotballdrakter
Tammi
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ০৭:০৯ পূর্বাহ্নWith havin so much written content do you ever run into any problems of plagorism or copyright violation? My blog has a lot of completely unique content I've either authored myself or outsourced but it seems a lot of it is popping it up all over the web without my authorization. Do you know any ways to help stop content from being stolen? I'd genuinely appreciate it. fotbollströjor
Terrell
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ০৯:৩৭ পূর্বাহ্নIf some one wishes expert view regarding running a blog after that i propose him/her to pay a quick visit this weblog, Keep up the fastidious job. Fotbollskläder Barn
Betsy
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ০৯:০২ পূর্বাহ্নGreetings! Very useful advice in this particular article! It's the little changes that will make the most significant changes. Many thanks for sharing! Fodboldtrøjer
Molly
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ১৪:২৭ অপরাহ্নGood article. I absolutely appreciate this site. Keep it up! camisetas futbol
Rico
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ১৬:১৬ অপরাহ্নYou should be a part of a contest for one of the greatest blogs on the internet. I am going to highly recommend this blog! fussball trikot
Dorie
১৩ নভেম্বর, ২০২০ - ১৬:২৯ অপরাহ্নHeya! I just wanted to ask if you ever have any trouble with hackers? My last blog (wordpress) was hacked and I ended up losing months of hard work due to no back up. Do you have any solutions to stop hackers? jalkapallo pelipaidat lapsille
Nh Asru
১০ নভেম্বর, ২০১৯ - ২০:০১ অপরাহ্নপড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো, অন্যকারো আর্টিকাল শেয়ার দিচস।।
নাঈমুল ইসলাম
১০ নভেম্বর, ২০১৯ - ২৩:৫২ অপরাহ্নভালো লাগলো,,,,,আলহামদু লিল্লাহ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
১১ নভেম্বর, ২০১৯ - ০০:১৭ পূর্বাহ্নলেখা ভালো তবে এত এত চরিত্র আর লোকেশন যে খেই থাকেনা।কয়েকটা জিনিস থাকলে ভালো হতঃ ১মানচিত্র ২.বংশ পরম্পরার চার্ট যেটা বোঝাবে কে কার সমসাময়িক ৩. নিশাপুর,ইসফাহান, সমরখনদ এসব এলাকা বর্তমানে কোন দেশে অবস্থিত সেগুলি উল্লেখ ।
ধন্যবাদ। আপনার উপদেশ অবশ্যই মাথায় থাকবে।
MOHAMMAD BASHIRUL ALAM
১১ নভেম্বর, ২০১৯ - ০৩:২৯ পূর্বাহ্নচিন্তাধারা- বুদ্ধিবৃত্তিক, সৃজনশীল, মননশীল ও মূল্যবোধসমৃদ্ধ প্রকাশনার এক অনন্য সমাহার।
নাঈম
১১ নভেম্বর, ২০১৯ - ১৫:৩৩ অপরাহ্নফন্টের কারণে পড়তে গিয়ে সমস্যা মনে হয়!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
১৩ নভেম্বর, ২০১৯ - ০৫:২৮ পূর্বাহ্নখুবই ভালো লাগলো। চিন্তাধরা আরো এগিয়ে যাবে সেই কামনায়।
গোলাম রববানী
১৩ নভেম্বর, ২০১৯ - ০৫:৪৮ পূর্বাহ্নফ্রন্টের কারণে পড়তে সমস্যা হচ্ছে।